প্রথম আলোর অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে ৫ ঘণ্টা আটকে রেখে পুলিশে সোপর্দ করা ও গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে রোজিনার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান।মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, রোজিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তিনি বিনা অনুমতিতে স্বাস্থ্য সচিবের একান্ত সচিবের রুম থেকে গোপনীয় কাগজপত্র সরানো ও মোবাইলে ছবি তুলে নিয়ে অপরাধ করেছেন, তাই তার নামে মামলা দিয়ে তাকে জেলে পাঠানো হয়েছে। বিবৃতিতে তিনি বলেন, এ ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। 

তিনি বলেন, সচিবালয়ে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে, যদি রোজিনা বিনা অনুমতিতে কোনো ফাইল নিয়ে থাকেন বা ছবি তুলে থাকেন তা ফুটেজে থাকার কথা কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকার প্রশাসন তা দেখাননি।বিবৃতিতে খালেকুজ্জামান বলেন, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের দুর্নীতির কথা আজ দেশের সকলের জানা, বিশেষ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির বিশাল চিত্র ইতোমধ্যেই জনসম্মুখে প্রকাশিত। 

করোনাকালে রিজেন্ট, জিকেজির দুর্নীতি, পূর্বে মিঠু সিন্ডিকেটের দুর্নীতি, স্বাস্থ্যের ডিজির গাড়ি চালকের দুর্নীতির খবরও দেশবাসী জানে।সম্প্রতি ১ হাজার ৮০০ টেকনোলজিস্ট নিয়োগে কোটি টাকার বাণিজ্য, ৯ সরকারি হাসপাতালে ৩৫০ কোটি টাকার জরুরি কেনাকাটাসহ বেশ কিছু লোমহর্ষক দুর্নীতি অনিয়মের অনুসন্ধানী খবর রোজিনা ইসলামের রিপোর্টে দেশবাসী জানতে পেরেছে। 

বিবৃতিতে খালেকুজ্জামান বলেন, রোজিনাকে আটক রাখা এবং গ্রেপ্তার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজ ওই সব আমলা প্রশাসনেরই আক্রোশের ফল।বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জেবুন্নেসার অবৈধ সম্পদের বিবরণ স্যোসাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে; যেখানে কানাডায় তার ৩টি, সাউথ লন্ডনে ১টি, ঢাকায় ৪টি বাড়ি এবং গাজীপুরে ২১ বিঘা সম্পত্তি ও ব্যাংকে নামে বেনামে ৮০ কোটি টাকার এফডিআরের কথা উল্লেখ রয়েছে।বিবৃতিতে খালেকুজ্জামান বলেন, দুর্নীতি করা ছাড়া সৎ পথে তার বেতনের টাকায় একজন সরকারি আমলা কি করে এতো সম্পদের মালিক বনে যান। তিনি ওই আমলার সম্পদ অর্জনের বিষয়ে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রোজিনাকে নির্যাতনের দায়ে তাকে অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবি জানান। 

একইসঙ্গে রোজিনার অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন এবং বাক, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কণ্ঠরোধকারী কুখ্যাত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান।