মুসলিম বিশ্বসহ সারা জাহানের মানবতার কল্যাণ কামনায় বিশেষ করে করোনার ভয়ঙ্কর ছোবল থেকে মুক্তির প্রত্যাশায় মোনাজাতের মধ্যদিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্প্রতিবার করোনার স্থাস্থ্যবিধি ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।এদিন করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে মুসল্লিরা ভিন্ন এক আমেজে নামাজ আদায় করলেন। চমৎকার আবহাওয়া থাকায় অনেক মসজিদের ব্যবস্থাপনায় খোলা মাঠে ঈদ জামাতে মানুষের ঢল নেমেছিল। 

নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের পরিচালনাধীন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের উদোগে একটি হাই স্কুল মাঠে আয়োজিত নামাজে ২০ হাজারের অধিক মুসল্লির সমাগম ঘটেছিল।উল্লেখ্য, গত বছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার নামাজ একেবারেই অনুষ্ঠিত হতে পারেনি লকডাউনে থাকায়। 

নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনে বাংলাদেশ মুসলিম সেন্টারেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরপর তিনটি জামাতে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি অংশ নেন। নিউইয়র্কের এস্টোরিয়া, ওজনপার্ক, নিউকার্ক, কোনি আইল্যান্ড, ব্রঙ্কস, ম্যানহাটানেও বেশ কয়েকটি মসজিদের উদ্যোগে বড় বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, ক্যালিফোর্নিয়া, নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়া, কানেকটিকাট, ম্যাসেচুসেটস, নিউ হ্যামশায়ার, রোড আইল্যান্ড, টেক্সাস, আরিজোনা, ওয়াশিংটন, ভার্জিনিয়া, ম্যারিল্যান্ড, ইলিনয়, মিনেসোটা, কানসাস, লুইজিয়ানা, আলাবামা থেকে সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, করোনার বিধি মেনেই বিপুল উৎসাহে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে কোথাও কোলাকুলির সুযোগ ছিল না। 

মসজিদ কর্মকর্তারাও শুভেচ্ছা বক্তব্যে স্বাস্থ্যবিধির কথা বিশেষভাবে স্মরণ করিয়ে দেন।এদিকে, রমজানের শুরুতে মুসলিম আমেরিকানসহ সারাবিশ্বের মুসলমানদের শুভেচ্ছা জানালেও ঈদ উপলক্ষে কোন শুভেচ্ছা বা ঈদ মোবারক জানাননি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে তার পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনী উষ্ণ অভিনন্দন ও ঈদ মোবারক জানিয়েছেন এক বিবৃতিতে।নিউইয়র্কের মিশিগানে করোনাভাইরাসের এই বৈশ্বিক পরিস্থিতিতেও মিশিগান রাজ্যের মসজিদেগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত। 

সকাল থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে মাস্ক পরিধান করে এবং নিজস্ব জায়নামাজ নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করার জন্য মসজিদে মসজিদে উপস্থিত হতে থাকেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে করোনাভাইরাস সংক্রমণে সরকার ঘোষিত বিভিন্ন বিধি নিষেধ থাকার কারণে বিভিন্ন পার্কে একসাথে জড়ো হয়ে ঈদ জামাত অনুষ্টিত হয়নি। 

তবে মসজিদের পার্কিং লাটে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে সামিয়ানা টানিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়।ডেট্রয়েট, হ্যামট্রামেক ও ওয়ারেন সিটির বাংলাদেশি মুসলিমদের পরিচালিত মসজিদগুলোতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে ঈদ জামাত অনুষ্টিত হয়েছে। 

ডেট্রয়েট সিটির বায়তুল মোকারম, মসজিদুন নুর, আল ফালাহ মসজিদ, আল ইসলাহ মসজিদ, বায়তুল মামুর মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার অব ওয়ারেন, মসজিদ আল ফাতাহসহ বাংলাদেশিদের দ্বারা পরিচালিত অন্যান্য মসজিদসহ আফ্রিকান ও আরবীয় কমিউনিটির অধিকাংশ মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্টিত হয়।রোদ্রজ্জ্বল সকালবেলায় মুসল্লিরা মসজিদের বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন একটি জামাত শেষ হলে আরেকটি ঈদের জামাতে শরিক হয়ে নামাজ আদায় করতে। 

চিরায়ত নিয়মে ঈদের নামাজ আদায়ের পর ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করতে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানোর ওপর ছিল নিষেধাজ্ঞা।