ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তানেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে লাফিয়ে। চলতি সপ্তাহে পাকিস্তানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড সংখ্যক বেড়েছে।  চলতি বছরের মার্চের প্রথম সপ্তাহে দেশটিতে করোনা রোগী ছিল ১৬ হাজার। কিন্তু শুধু এপ্রিল মাসেই এই সংখ্যা এসে দাঁড়ায় ১ লাখ ৪০ হাজারে। শুধু এপ্রিলেই দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে প্রায় ৩ হাজার জন। 

করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটিতে এক মাসে এটিই ছিল সর্বোচ্চ মৃত্যু। সরকারি তথ্য থেকে জানা গেছে, করোনা রোগীদের জন্য লাহোরের বড় সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটগুলির (আইসিইউ) বেডের সক্ষমতা ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত আছে ৯৩ শতাংশ। অন্যদিকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত প্রদেশ পাঞ্জাবের কয়েকটি বড় শহরে অক্সিজেনসহ ভেন্টিলেটর এবং বেডের সক্ষমতা আছে ৮০ শতাংশ।সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকলে পাকিস্তানে করোনা রোগীদের হাসাপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। 

দেশটির কেন্দ্রীয় পরিকল্পনামন্ত্রী আসাদ উমর ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, দেশটিতে যে পরিমাণ অক্সিজেন মজুদ আছে তার ৯০ শতাংশই সরবরাহ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশেরও বেশি অক্সিজেন ব্যবহার হচ্ছে হাসপাতালগুলোতে।পাকিস্তানের প্রধানামন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, দেশটিতে ৯৬৩ জন মানুষের জন্য মাত্র একজন চিকিৎসক রয়েছেন। 

করোনা রোগীর সংখ্যা আরও বাড়লে দেশটিতে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। করাচির জিন্নাহ পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিকেল সেন্টারের (জেপিএমসি) নির্বাহী পরিচালক ডা. সেমি জামালি বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরে মানুষজন ভেবেছিল এটাই শেষ। তারা মাস্ক পরা ও সামাজিক বিধিনিষেধ কিছুই মানেনি। 

এখন করোনার আরও একটি ধাক্কা সামলানোর মতো আমাদের প্রস্তুতি নেই।পাকিস্তানে করোনার প্রথম ধাক্কাটি আসে গত বছরের মে থেকে জুন মাসে। 

এর কয়েক সপ্তাহ পরেই দ্বিতীয় ঢেউ আসে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত সংক্রমণের হার সেখানে অনেক বেশি ছিল।  গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেখানে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। 

এরপর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখ ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে ১৮ হাজার ৪২৯ জনের।