খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সরকারের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে তার পরিবার। 

এরইমধ্যে পরিবারের পক্ষ থেকে তার বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হলেও শনিবার রাত পর্যন্ত সরকারের অনুমতি মেলেনি। ​তবে রোববার এ বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। শনিবার সন্ধ্যায় আইনমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত শিথিলের সুযোগ আছে কি-না তা নিয়ে মতামত প্রদান শেষে রোববার এ সংক্রান্ত নথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।তিনি বলেন, ‘শনিবার ছুটির দিনে কর্মকর্তা-কর্মচারী না থাকায় নথি পাঠানো সম্ভব হয়নি। 

তাই আইনি মতামতসহ রোববার সকালে কাগজপত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সে অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ কী মতামত দেওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘কী মতামত দিয়েছি সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই জানাবে।রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা। 

তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক শনিবার জানান, তাকে শনিবারও অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। তবে আগের ৩ থেকে ৪ লিটারের পরিবর্তে ১ থেকে ২ লিটার অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। তিনি সামান্য খাবার খেতে পারছেন। স্যালাইন চলছে। 

তার ফুসফুসের ওপরের স্ক্রিনের ভেতর পানি জমছে। যেটা আশঙ্কাজনক মনে হলেও পরীক্ষায় তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। সাধারণত হৃদযন্ত্রের কোনো ত্রুটির কারণে এই পানি জমে। তবে তার হৃদযন্ত্র অনেকটাই ভালো বলে জানান ওই চিকিৎসক।বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলেও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হচ্ছে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কাছাকাছি দেশে নেওয়ার মতো অবস্থা তার এখনও রয়েছে। 

তবে সরকারের অনুমতি পাওয়ার পর মেডিকেল টিমের সদস্যরা তার সব বিষয়ে আবারও পর্যবেক্ষণ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। রোববার মেডিকেল টিমের বৈঠক হবে বলে জানা গেছে।অবশ্য আরেকজন চিকিৎসক বলেন, এখানকার মেডিকেল টিমের সিদ্ধান্ত বা পরামর্শ নিলেই হবে না।

যে দেশে এবং যে হাসপাতালে তার চিকিৎসা নেওয়া হবে, সেখানকার চিকিৎসকরাও তার সর্বশেষ অবস্থা জেনে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।বিএনপি চেয়ারপারসনের পারিবারিক সূত্র জানায়, বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে সরকারের সবুজ সংকেত পেয়ে তারা ইতোমধ্যে প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। 

এখন সরকারের অনুমতি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পাসপোর্ট, ভিসাসহ অন্যান্য বিষয়াদি চূড়ান্ত করবেন তারা। 

এক্ষেত্রে সরকারের আদেশে অল্প সময়ের মধ্যে সেসব করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তারা এখনো কিছু জানেন না। 

তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা এখনো স্থিতিশীল, আগের দিনের মতো অপরিবর্তিত রয়েছে।