আগামী সোমবার ও মঙ্গলবার (১২ ও ১৩ এপ্রিল) চলমান লকডাউন ধারাবাহিক থাকবে। অর্থাৎ এই দুইদিন প্রথম ধাপের চলমান লকডাউনের ধারাবাহিকতা চলবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।রোববার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।তিনি বলেন, আজ শেষ হচ্ছে প্রথম দফার লকডাউন। ১২ ও ১৩ এপ্রিলও চলমান বিধিনিষেধ থাকবে। 

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে শেখ হাসিনা সরকার সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ধারাবাহিকতায় সরকার লকডাউন ঘোষণা করে।তিনি জানান, ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে। এসময় জরুরি সেবা ছাড়া সবাইকে ঘরে অবস্থান করতে হবে আমাদের বৃহত্তর স্বার্থে। 

প্রয়োজনীয় নির্দেশনাসহ সরকার সময়মতো প্রজ্ঞাপন জারি করবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আগামীকাল সোমবার এবং পরশু মঙ্গলবার যথারীতি শুধু দেশের সিটি করপোরেশন এলাকায় শর্তসাপেক্ষে সমন্বিত ভাড়ার অর্ধেক আসন খালি রেখে গণপরিবহন চলবে এবং দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহন বন্ধ থাকবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত।আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দেশের মানুষকে এই সংকটকালে ধৈর্য্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বাস্থ্যবিধির প্রতি সামান্য অবহেলা আমাদের চিরচেনা জীবন থেকে ছিটকে দিতে পারে। 

হয়ে যেতে পারে পরিবার-পরিজন আত্মীয়-স্বজনের এই মায়াময় পৃথিবী অচেনা।জীবনের পাশাপাশি জীবিকার চাকা সচল রাখতে আমাদের আস্থার ঠিকানা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর আস্থা রাখুন, ভরসা রাখুন স্রষ্টার প্রতি জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সবার প্রচেষ্টা এবং পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে নিশ্চয়ই এ মহামারি থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে আবারও ফিরবে পৃথিবী নিজ রূপে। 

আওয়ামী লীগ নাকি নিজস্ব ইতিহাস তৈরি করছে-বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের নিজস্ব ইতিহাস তৈরির কোনো কারখানা নেই। 

আওয়ামী লীগ ইতিহাসের মীমাংসিত সত্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং এর চর্চা অনুসরণ করে।মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার পূর্বাপর ইতিহাস বিকৃতিভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ককে বাদ দিয়ে রচনা করতে চেয়েছিল খণ্ডিত ও বিকৃত ইতিহাস। তিনি বলেন, ইতিহাসের নায়কদের বিএনপি ভিলেনে রূপ দেওয়ার অপচেষ্টা করেছিল। তারা স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠককে ঘোষক বানাতে চেয়েছিলেন।ইতিহাসের ফুটনোটকে তারা ইতিহাসের নায়ক বানাতে চেয়েছিলেন।ওবায়দুল কাদের বলেন, হাতের তালু দিয়ে যেমন সূর্যকে ঢাকা যায় না, তেমনি স্বাধীনতার ইতিহাসও আজ স্বমহিমায় সমুজ্জ্বল।যারা ইতিহাসের পায়ে শিকল পরিয়েছিল, আজ তাদের স্বরূপ উন্মোচিত হচ্ছে বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের। 

তিনি বলেন, তাইতো তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, শুরু করছে পুরনো খেলা এবং চর্চা করছে অগণতান্ত্রিক পথ।তিনি বলেন, জনগণ এখন সজাগ রয়েছে স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি ও স্বাধীনতার মূল্যবোধ বিনষ্টের বিরুদ্ধে। 

এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) ২৪২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য তিন কোটি টাকার গ্রাচুইটি প্রদান এবং মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। এসময় মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিআরটিসিকে এগিয়ে নিতে এর বহরে সহস্রাধিক বাস ও ট্রাক সংযোজনসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।তিনি বলেন, এখন প্রয়োজন বিআরটিসির নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা দক্ষতা উন্নয়ন। 

সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, জনগণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে শেখ হাসিনা সরকার ঢাকাসহ অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকাধীন সড়কে শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বিআরটিসিসহ পরিবহন মালিক শ্রমিক সংগঠনসমূহকে সরকারি নির্দেশনা মেনে পরিবহন চালানোর অনুরোধ জানান।