দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর 'সিন্ডিকেটের' সঙ্গে সরকার জড়িত থাকায় সব ধরনের পণ্যের মূল্য বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, 'আমরা খুব উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত। 

সামনে রমজান। ইতোমধ্যে চাল-ডাল-তেল-লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বহুগুণে বেড়েছে। এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।শুক্রবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব অভিযোগ করে বলেন, 'সরকারের লোকজনই এসব দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেট তৈরি করে। প্রকৃতপক্ষে এই অর্থনীতি এখন দুর্নীতিবাজদের অর্থনীতি হয়ে উঠেছে, লুটেরাদের অর্থনীতি হয়ে উঠেছে।মির্জা ফখরুল বলেন, 'আওয়ামী লীগ সরকার জনগণবিরোধী সরকার। 

বর্গীদের মতো এরাও লুটপাট করছে এবং বিদেশে তাদের বিত্ত তৈরি করছে। সেখানে দেশের সম্পদ পাচার করে দিচ্ছে।' এ সময় আবারও সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সংসদ নির্বাচন দিন। পাশাপাশি বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সব দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিন।'সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ফের মামলা করা হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটছে। 

এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিএনপি যে সাংগঠনিক কার্যক্রম করছিল, সংগঠিত হয়ে যে আন্দোলন শুরু করেছিল, সেসব একেবারেই বন্ধ এবং নিশ্চিহ্ন করা, মতপ্রকাশের অধিকার রক্ষার আন্দোলনকে ব্যাহত ও দমন করা।ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে সংঘটিত ঘটনার উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিলে এবং সমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলায় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোট ২০ জনকে হত্যার ঘটনা এক কলংকজনক অধ্যায় সৃষ্টি করেছে। 

অনির্বাচিত সরকার তার ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে গণতন্ত্রের সব মূল্যবোধকে ধ্বংস করে একদলীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার হীন চক্রান্ত করছে।মির্জা ফখরুল বলেন, গত কয়েক দিনের হত্যা, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা এবং সারাদেশের আওয়ামী সন্ত্রাস আড়াল করতে অডিও নাটক সাজিয়ে বিএনপি নেত্রী নিপুণ রায় চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ড নেওয়া হয়েছে। 

ফের হাজার হাজার অজ্ঞাতপরিচয় আসামির বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করার হীন পরিকল্পনা করা হচ্ছে।এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, এতেও বলা হয়েছে, করোনার সুযোগ নিয়ে কর্তৃত্ববাদী সরকার বিরোধী দলকে দমন করতে উঠেপড়ে লেগেছে। 

এটাই বাস্তবতা।মির্জা ফখরুল বলেন, করোনাজনিত পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। তারা নিজেদের সুরক্ষিত রেখেছে, নিজেরা মাস্ক পরেছে, ফেস-শিল্ড পরেছে, ঘর থেকে বের হয়নি। অন্যদিকে সাধারণ মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।