ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার আট ধাপের বিশাল ভোটযজ্ঞ শেষ হবে বৃহস্পতিবার। এদিন অষ্টম ধাপে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, কলকাতা উত্তর ও বীরভূমের ৩৫টি আসনে ভোট গ্রহণ করা হবে। 

এর মধ্যে বেশিরভাগ আসনে এবার ত্রিমুখী লড়াই হবে। বিশেষ করে মালদহের ছয়টি আসনে বিজেপি, কংগ্রেস-বাম জোট ও তৃণমূলের প্রার্থীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।মালদহের ইংরেজবাজার, মানিকচক, সুজাপুর, মালদহ, মোথাবাড়ি ও বৈষ্ণবনগর আসনে বৃহস্পতিবার ভোট হবে। ২০১৬ সালে সবাইকে অবাক করে রাজ্যের বৈষ্ণবনগর আসনে প্রথম জয় পেয়েছিল বিজেপি। 

এবারও জয়ের ধারাবাহিকতা থাকবে কিনা, তা নিয়ে উত্তেজনা রয়েছে সব দলেই।২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে মালদহের ছয় আসনে বাম-কংগ্রেস জোটকে পেছনে ফেলে বিজেপি চার আসনে বিপুল ভোটে এগিয়ে ছিল। 

বিজেপি নেতৃত্বের আশা, আজকের ভোটেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। মালদহ জেলা বিজেপি সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল জানান, এসব আসনে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি বেড়েছে। 

সে কারণেই নির্বাচনের আগে তৃণমূল নেতৃত্বের একটি বড় অংশ বিজেপিতে যোগ দিয়েছে।মালদহ জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান ও ইংরেজবাজার আসনের প্রার্থী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর মতে, পরিস্থিতি বদল হয়েছে অনেকটাই। তিনি বলেন, 'বিজেপির শাসনে আমজনতা নাজেহাল। 

পদ্মফুলে চলে যাওয়া ভোটার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানবিক লড়াইয়ের মানসিকতাকে স্যালুট জানিয়ে জোড়া ফুল চিহ্নের ওপর ভরসা রাখবেন।এদিকে মালদহ পরিচিত গণি খানের ঘাঁটি হিসেবে। এবিএ গণি খান চৌধুরী হলেন প্রখ্যাত কংগ্রেস নেতা। 

সবাই তাকে চেনেন 'বরকতদা' হিসেবে। ১৯৫৭ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ২৩ বছর ছিলেন তিনি বিধায়ক। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস আমলের রাজ্যমন্ত্রীও। শুধু তাই নয়; সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং রাজীব গান্ধীর আমলে তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীও। তিনিই ছিলেন কলকাতার পাতাল রেল আর চক্ররেল তৈরির প্রধান কারিগর। 

২০০৬ সালে মারা যান গণি খান। এর পর মালদহ কংগ্রেসের দায়িত্বে আসেন গণি খানের উত্তরাধিকারীরা। গণি খানের ভাগ্নে ঈশা খান চৌধুরী বলেছেন, মালদহের মানুষ কংগ্রেসের ওপর আগেও আস্থা রেখেছিলেন, এবারও রাখবেন।এবার মুর্শিদাবাদেও ত্রিমুখী লড়াই হবে। 

এ জেলার ১১ আসনে এবার হানা দিতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। তবে দীর্ঘদিনের এই ঘাঁটি কোনোমতে হাতছাড়া হতে দিতে চায় না কংগ্রেস।করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। 

বুধবার কমিশন জানিয়েছে, প্রার্থীদের যদি টিকার দুটি ডোজ না নেওয়া থাকে, তাহলে ২ মে ভোট গণনাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না তারা। 

দেখাতে হবে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্টও। গণনার ৪৮ ঘণ্টা আগে করোনা পরীক্ষা করাতে হবে প্রার্থীদের। 

কমিশন জানিয়েছে, দেশে বাড়তে থাকা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখেই এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।আগামী ২ মে পশ্চিমবঙ্গসহ আরও তিন রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল পদুচেরির ভোট গণনা ও ফল ঘোষণা করা হবে।