নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।বুধবার বিকালে সিটি কর্পোরেশনসমূহের নির্বাচন বাতিলের দাবিতে এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন। 

ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপির উদ্যোগে খিলগাঁও তালতলা সিটি কর্পোরেশন সুপার মার্কেটের সামনে সড়কে দুটি ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চে 'সারা দে্শে নিরপেক্ষ নির্বাচন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল' এর দাবিতে এই সমাবেশ হয়। ঢাকা উত্তরের আয়োজিত এই সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো মোহাম্মদপুরের শহীদ পার্কে। রাতে পুলিশ সেখানে আপত্তি জানালে সমাবেশস্থল পরিবর্তন করে খিলগাঁওয়ে আনা হয়।তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন তো আজ্ঞাবহ ক্রীতদাসের চেয়েও খারাপ। 

সরকারকে কিছু বলতে হয় না, তার আগে বলে দেয়-খুব ভালো নির্বাচন হয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে, এই যে, আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা সব জয়লাভ করেছে।নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। আজকে এই জনসভা থেকে আমরা ঘোষণা করতে চাই, অবিলম্বে এই নির্বাচন কমিশনকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন নতুন করে যোগ্য ব্যক্তিদের দ্বারা গঠন করতে হবে।সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা কী ভোট দিতে গেলে ভোট দিতে পারি? এই যে আমাদের ছয়জন মেয়র প্রার্থী এখানে বসে আছেন তারা কেউ ভোট করতে পারেননি। 

তাদের ভোটের দিন সবাইকে বের করে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে এবং সন্ধ্যাবেলা তাদের পছন্দমতো ফলাফল ঘোষণা করেছে।তিনি আরও বলেন, কারণ আমরা জানি জনগণ যদি ভোট দেয়, ভোট দিতে পারে তাহলে আপনারা কোনোদিনই আর ক্ষমতায় আসতে পারবেন না।ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার খুব দুর্বল সরকার। 

এতো দুর্বল যে তাদের নিজেদের রক্ষা করবার জন্য নতুন নতুন আইন তৈরি করতে হয়। এই যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরি করেছে। এই যে আপনারা মোবাইল বলেন, ফেসবুক খোলেন-এগুলো ওরা নিয়ন্ত্রণ করে, মনিটর করে। 

কে কোথায় কি বলে না বলে ওগুলো দেখে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেন, ‘বর্তমান সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যে রুপে ধারণ করেছে সেটি আমাদের পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও রক্ষী বাহিনীর কথা মনে করি্য়ে দেয়। আমাদের এই গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে আজ পর্যন্ত এক হাজারের উপরে নেতা-কর্মী গুম হয়ে গেছে…।সভাপতির বক্তব্যে উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী তাবিখ আউয়াল বলেন, ‘আজকে তালতলার মার্কেটের সামনে যে জনতার ঢল নেমেছে সেখানে বিএনপি কর্মীরা শুধু নয়, সাধারণ মানুষরা আজকে যোগ দিয়েছে। 

আমরা জানি, ঢাকাসহ বাংলাদেশে নিয়মিত একটা ভোট কর্মসূচি নামে একটা তামাশা দেখছি। নিয়মিত আমাদের ভোটকে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে, আগের রাতে ভোটের বাক্স ভরিয়ে রাখে তারপরে ইভিএমের মাধ্যমে আমাদের ভোট ছিনিয়ে নেয়।বিএনপির নেতাদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শ্যামা ওবায়েদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, শিরিন সুলতানা, আবদুস সালাম আজাদ, অঙ্গসংগঠনের মধ্যে মহানগর দক্ষিনের কাজী আবুল বাশার, হাবিবুর রশীদ হাবিব, যুব দলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, এসএম জাহাঙ্গীর, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, শ্রমিক দলের মুস্তাফিজুল করীম মজুমদার প্রমুখ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।