গণটিকাদান কর্মসূচির ১৯তম দিন সোমবার সারাদেশে নতুন করে এক লাখ ১৬ হাজার ৩০০ জন করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন।এ নিয়ে মোট টিকা নিয়েছেন ৩২ লাখ ২৬ হাজার ৮২৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২০ লাখ ৮১ হাজার ৮১৬ জন এবং নারী ১১ লাখ ৪৫ হাজার নয়জন। 

এছাড়া সোমবার টিকা নেওয়াদের মধ্যে পুরুষ ৬৯ হাজার ৬৩৫ জন এবং নারী ৪৬ হাজার ৬৬৫ জন। এদিকে টিকা পেতে আগ্রহ প্রকাশ করে রোববার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ৪৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৯২ জন সুরক্ষা অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত হয়েছেন।সোমবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো টিকাদান কর্মসূচির দৈনিকভিত্তিক তথ্য বিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

এতে বলা হয়েছে, সোমবার ঢাকা বিভাগে টিকা নিয়েছেন ৪৩ হাজার ১৪৯ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে তিন হাজার হাজার ৯০৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২২ হাজার ৭৯৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ১১ হাজার ৪৭১ জন, রংপুর বিভাগে নয় হাজার ১৯৬ জন, খুলনা বিভাগে ১৬ হাজার ৩৫০ জন, বরিশাল বিভাগে চার হাজার ৪৫৯ জন এবং সিলেট বিভাগে চার হাজার ৯৭৫ জন।টিকাগ্রহণে শীর্ষে থাকা ঢাকা বিভাগে মোট টিকা নিয়েছেন ৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪৮৮ জন। 

এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগে এক লাখ ৩৯ হাজার ২৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে সাত লাখ চার হাজার ৫৯৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৩৮১ জন, রংপুর বিভাগে দুই লাখ ৯৩ হাজার ৪২৬ জন, খুলনা বিভাগে চার লাখ ৯০৬ জন, বরিশাল বিভাগে এক লাখ ৫১ হাজার ৯৩১ জন এবং সিলেট বিভাগে এক লাখ ৯৭ হাজার ৬৬ জন করোনার টিকা নিয়েছেন।শুরুতে প্রতিদিন দুই লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে স্বাস্থ্যবিভাগ। 

কিন্তু টিকাগ্রহীতাদের আগ্রহ কম থাকায় ওই লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে প্রতিদিন এক লাখ করা হয়। তাদের সাড়া না মেলায় বয়সসীমা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৪০ বছর করা হয়। অর্থাৎ আগে নির্দিষ্ট ১৫ ক্যাটাগরির বাইরে ৫৫ বছরের ওপরের বয়সীরা টিকা নিতে পারতেন। পরে তা কমিয়ে ৪০ বছর বা তার ওপরের বয়সী করা হয়। এরপরই টিকাদান কর্মসূচিতে গতি বাড়ে।কিন্তু ১৮ ফেব্রুয়ারির পর প্রতিদিনই টিকাগ্রহীতার সংখ্যা কমছে। 

টিকাদান কর্মসূচির তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শুরুতে গত ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি দুই দিন ৫৬৭ জনকে পরীক্ষামূলক টিকা দেওয়া হয়েছিল।আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচির প্রথম দিন ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে টিকা নেন ৩১ হাজার ১৬০ জন। 

দ্বিতীয় দিন ৮ ফেব্রুয়ারি এ সংখ্যা ছিল ৪৬ হাজার ৫০৯ জন। তৃতীয় দিন ৯ ফেব্রুয়ারি তা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে এক লাখ এক হাজার ৮২ জনে দাঁড়ায়। 

চতুর্থদিন ১০ ফেব্রুয়ারি টিকা নেন এক লাখ ৫৮ হাজার ৪৫১ জন।পঞ্চম দিনে ১১ ফেব্রুয়ারি দুই লাখ চার হাজার ৫৪০ জন টিকা নেন। শুক্রবার ১২ ফেবুয়ারি টিকাদান বন্ধ ছিল। পরবর্তী দুই দিনে টিকাদান কিছুটা কমে আসে। বিশেষ করে পঞ্চম দিনে দুই লাখের বেশি টিকাগ্রহণের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কেন্দ্রে তাৎক্ষণিক নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। 

এরপর টিকাগ্রহীতা কিছুটা কমে ষষ্ঠ দিনে ১৩ ফেব্রুয়ারি এক লাখ ৯৪ হাজার ৩৭১ জন টিকা নেন।সপ্তম দিনে ১৪ ফেব্রুয়ারি এক লাখ ৬৯ হাজার ৩৫৩ জন টিকা নেন। তবে অষ্টম দিনে ১৫ ফেব্রুয়ারি টিকাগ্রহীতা আবারও বেড়ে দুই লাখ ২৬ হাজার ৬৭৮ জনে পৌঁছায়। 

নবম দিনে ১৬ ফেব্রুয়ারি টিকাগ্রহীতার সংখ্যা আরও বেড়ে দুই লাখ ২৬ হাজার ৯০২ জনে পৌঁছায়। দশম দিনে ১৭ ফেব্রুয়ারি বুধবারও টিকাগ্রহীতার সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে যায়। টিকা নেন দুই লাখ ২৬ হাজার ৭৫৫ জন। ১১তম দিনে ১৮ ফেব্রুয়ারি টিকা নেন দুই লাখ ৬১ হাজার ৯৪৫ জন। 

এটিই এখন পর্যন্ত একদিনে টিকাগ্রহীতাদের সর্বোচ্চ সংখ্যা।এরপর প্রতিদিনই টিকাগ্রহীতার সংখ্যা কমতে থাকে। ১৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ১২তম দিনে ২০ ফেব্রুয়ারি টিকাগ্রহীতা আগের তুলনায় কিছুটা কমে আসে। 

ওইদিন টিকা নেন দুই লাখ ৩৪ হাজার ৫৬৪ জন। ২১ ফেব্রুয়ারি রোববার সরকারি ছুটির দিনে টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ১৩তম দিনে ২২ ফেব্রুয়ারি টিকা নেন আরও দুই লাখ ২৫ হাজার ২৮০ জন।১৪তম দিনে ২৩ ফেব্রুয়ারি টিকা নেন এক লাখ ৮২ হাজার ৮৯৬ জন। ১৫তম দিনে ২৪ ফেব্রুয়ারি টিকা নেন এক লাখ ৮১ হাজার ৯৮৫ জন। 

১৬তম দিনে ২৫ ফেব্রুয়ারি টিকা নেন এক লাখ ৮১ হাজার ৪৩৯ জন।শুক্রবার টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ১৭তম দিন শনিবার টিকাগ্রহীতার সংখ্যা আরও কমে এক লাখ ৩৩ হাজার ৮৩৩ জনে পৌঁছে। এরপর ১৮তম দিন রোববার আরও কমে টিকা গ্রহণ; এ দিন সারাদেশে টিকা নেন এক লাখ ২৫ হাজার ৭৫২ জন।