মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট ইউ উইন মিন্ট, নিজেদের পার্টির চেয়ারম্যান ও স্টেট কাউন্সিলের অং সান সু চিসহ সামরিক অভ্যুত্থানে যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের দ্রুত মুক্তি চেয়েছে ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। 

মঙ্গলবার একটি বিবৃতিতে এ দাবি জানায় দলটি।দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে সোমবার ভোরে অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ দলের সিনিয়র নেতাদের আটক করে জরুরি অবস্থা জারি করেছে সেনাবাহিনী। ক্ষমতা দখলে নিয়েছেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ এবং সেনাপ্রধান মিন অং লাইং। এমনকি একদিনের মধ্যে মন্ত্রিসভায়ও বিরাট পরিবর্তন এনেছেন তিনি।এনএলডির নির্বাহী কমিটির একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থান দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। একইসঙ্গে জনগণের সার্বভৌমত্বকেও অপেক্ষা করা হয়েছে। 

এটি একটি বিশাল প্রতিবন্ধকতা।এনএলডি বলছে, নতুন পার্লামেন্ট শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে দেশের কমান্ডার-ইন-চিফের ক্ষমতা দখল সংবিধান পরিপন্থী। এটি মানুষের সার্বভৌমত্বকে উপেক্ষা করে। যদিও ‘সামরিক বাহিনীর দেওয়া লোকেরা’ও ২০২০ সালের নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে পার্লামেন্টে যাচ্ছিলেন।গত ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি নিরঙ্কুশ জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২টি আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছিল ৩৪৬টি আসন। 

সোমবার থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল।নেতাদের মুক্তি দাবির পাশাপাশি এনএলডি সেনাবাহিনীকে ওই নির্বাচনী ফলাফল মেনে নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে দেশের সংবিধান অনুযায়ী সংসদ আহ্বান করারও আহ্বান জানিয়েছে দলটি।বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর এ পদক্ষেপ দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ, গণতান্ত্রিক ফেডারেল ইউনিয়ন গঠনের প্রচেষ্টা, কভিড-১৯ মহামারির মোকাবিলা এবং জাতিগত ঐক্য, শান্তি ও বিকাশ অব্যাহত রাখার পুরো বিরোধী। এটি একটি বিশাল প্রতিবন্ধকতা।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনএলডি নিরঙ্কশ জয় পেলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। তারা নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। 

যদিও ইউএসডিপি ৭১টি আসনে জয় পেয়েছে।নির্বাচনে জালিয়াতি’র প্রতিক্রিয়ায়ই দেশে জরুরি অবস্থা জারি করার মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। অবশ্য এ আশঙ্কা বেশ কয়েকদিন আগে দেখা দিলেও মাঝখানে সেনাবাহিনী এসব উড়িয়ে দিয়ে বলেছিল, সেনাবাহিনী সংবিধানের সুরক্ষা দিয়ে আসছে; বাহিনীটি আইন অনুযায়ীই কাজ করবে। 

কিছু সংস্থা ও গণমাধ্যম তারা যা চায়, তাই ধরে নিয়েছে এবং লিখছে।এর আগে ১৯৬২ সালে এক অভ্যুত্থানের পর দেশটি টানা ৪৯ বছর সামরিক বাহিনীর হাতে শাসিত হয়েছে। অর্থাৎ দেশটি মাঝখানে মাত্র ১০ বছর ছিল গণতন্ত্রের পথে। অবশ্য এ সময়েও সামরিক হস্তক্ষেপ যখন তখনই ছিল।