মাঠে ফিল্ডার একজন কম; ধরে এনে নামিয়ে দেওয়া হোক একজনকে। ব্যাটসম্যান আসতে দেরি করছে; একজনকে নামিয়ে দেওয়া হোক যেকোন জায়গায়। বাংলাদেশ জাতীয় দলে সৌম্য সরকারও যেন হয়ে উঠেছেন 'দুধ-ভাত' ক্রিকেটার।টিম ম্যানেজমেন্টের দরকার পড়লেই তাকে ডেকে আনা হয় 'সাময়িক' বদলি হিসেবে। নামিয়ে দেওয়া হয় যেখানে ফাঁকা সেখানে। শেষ ক'বছর এভাবেই চলছে সৌম্য সরকারের ক্যারিয়ার। 

ওয়ানডে, টি-২০ এবং টেস্ট সব জায়গাতেই নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিতেই যেন ফুরিয়ে যাচ্ছে সৌম্যর আলো।ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে তিনি দলে ছিলেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে। লোয়ার মিডল অর্ডারও বলা চলে। 

এক ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ হয়েছিল তার। সৌম্য শুধু মিডল অর্ডারের বিবেচনায় ছিলেন বললে ভুল হবে। তিনি দলে ছিলেন টপ অর্ডারের বিকল্প হিসেবেও।ওয়ানডে সিরিজে ওপেন করেছেন তামিম ইকবাল এবং লিটন দাস। তিনে ব্যাটিং করেছেন নাজমুল শান্ত। দলে টপ অর্ডারে তাদের বিকল্প কোন ক্রিকেটার ছিলেন না। 

অর্থাৎ তামিম-শান্তদের কেউ ইনজুরি বা অন্য কারণে ছিটকে গেলেই 'গেটিস' দেওয়া হতো সৌম্যকে দিয়ে।টেস্ট সিরিজে আবার ১৮ জনের দলেও ছিলেন না বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু সাদমানের ইনজুরির কারণে দলের বাইরে থেকে আনা হলো তাকে। 

ওপেনার বিবেচনায় দলে থাকা সাইফ হাসানকে রাখা হলো বেঞ্চেই। ওয়ানডে সিরিজে মিডল অর্ডারে ব্যাট করা সৌম্যকে ঢাকা টেস্টে নামিয়েও দেওয়া হলো ওপেনিংয়ে। টেস্ট ক্রিকেটে বিষয়টা বোধ হয় বিরল। ওয়ানডেতে ইনিংসে ওপেন করা ব্যাটসম্যানকে হরহামেশাই মিডল বা লোয়ার মিডলে ব্যাট করতে দেখো যায়। 

কিন্তু নাইট ওয়াচম্যান ছাড়া ওয়ানডেতে মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যান সর্বশেষ কবে টেস্টে ওপেনার হিসেবে খেলেছেন গবেষণার বিষয়। কিন্তু ফেরার টেস্টে সৌম্যকে সেটা করতে হলো। তাকে আরও অনেক কিছুই করতে হচ্ছে।ব্যাটসম্যান সৌম্যকে স্লোয়ার মিডিয়াম পেসার হওয়ার চেষ্টা করতে হচ্ছে। ওয়ানডে-টি-২০'তে দু-চার ওভার বল করার প্রস্তুতি রাখতে হচ্ছে। করতে হচ্ছে এরকম অনেক কিছুরই চেষ্টা। 

এতো কিছুতে 'হাসফাঁস' সৌম্যর লাভ হচ্ছে কতটা? ভালো বলতে পারবেন সৌম্যই। এখানে শুধু বলে রাখা যায়, এই পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফাঁদে পড়ে শুক্রবার টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ডাকটা মেরেই মাঠ ছাড়লেন তিনি।