রাজশাহীর চারঘাটে পৌর নির্বাচনের প্রচারণায় পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে শনিবার সকালে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। 

এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি চারঘাট পৌরসভার নির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিএনপির কর্মীরা দলীয় প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র জাকিরুল ইসলাম বিকুলের ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার লাগাতে চারঘাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় গেটে এলে আওয়ামী লীগ কর্মীরা তাদের বাধা দেয় এবং ছাত্রদল কর্মী রুবেল হোসেনসহ দুজনকে পিটিয়ে আহত করে। 

পরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ ও বর্তমান মেয়র জাকিরুল ইসলাম বিকুল তাদের সমর্থকদের নিয়ে চারঘাট চার রাস্তার মোড়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী একরামুল হকের নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজ ক্লিনিকের সামনে পৌঁছালে দুপক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। 

এসময় প্রায় আটটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। ককটেলের আঘাতে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মাটিতে পড়ে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে কুপিয়ে আহত করে। এছাড়া ইটপাটকেল ও মারামারিতে ছাত্রলীগ নেতা ইকবাল হোসেন মুক্তা, আওয়ামী লীগ কর্মী আজিম উদ্দীন, শ্রমিকলীগ নেতা বিপ্লব আহত হন। আহত ছাত্রলীগ নেতা তুষাড়কে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।চারঘাট পৌরসভায় বিএনপির দলীয় প্রার্থী জাকিরুল ইসলাম বিকুল দাবি করেন, তিনি তার মায়ের কবর জিয়ারত করে প্রচারণা করতে চারঘাট বাজারে যাওয়ার সময় প্রচার মিছিলে আওয়ামী লীগ কর্মীরা হামলা করে। 

এতে বিএনপির অন্তত ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী একরামুল হকের পোস্টারের উপরে বিএনপির সমর্থকরা ধানের শীষের পোস্টার লাগায়। নিষেধ করলে তারা মারমুখী আচরণ করে। পরে বিএনপির নেতা আবু সাঈদ চাঁদ ও মেয়র প্রার্থী জাকিরুল ইসলাম বিকুলের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র হাতে তারা হামলা করে। 

এসময় তারা ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে আওয়ামী লীগের আট নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা করা হবে।এদিকে এ ঘটনার পর থেকে চারঘাট বাজারে উত্তেজনা চলছে। বিএনপির কর্মীরা মেয়র প্রার্থী জাকিরুল ইসলাম বিকুলের বাড়িতে অবস্থান নিয়ে আছেন। 

আওয়ামী লীগ কর্মীরা চারঘাট বাজারে দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে আছেন।চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, নৌকার প্রার্থীর পোস্টারের ওপর ধানের শীষের পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে এই মারামারির সূত্রপাত। 

পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণ করে আতংক সৃষ্টি করলে দুপক্ষের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছে। 

বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। চারঘাটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ দিলে মামলা হবে।