মিয়ানমারে সামরিক জান্তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত হওয়ার পর রোববার ফের হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমেছেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর থেকে দেশটির জনগণ সেনাশাসনের অবসানের দাবিতে গণবিক্ষোভ করছেন।শনিবার দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে বিক্ষোভে গুলি চালায় পুলিশ। 

এসময় দুইজন বিক্ষোভকারী নিহত হন। এর আগে, বিক্ষোভে গিয়ে গুলিবিদ্ধ এক নারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।রোববার ইয়াঙ্গুনে কয়েক হাজার মানুষকে রাস্তায় নেমে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। মান্ডালে কয়েকশ’ মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন।মাইতকিইনা শহরে গত কয়েকদিনে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। 

বিক্ষোভে নিহতদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা গেছে প্রতিবাদকারীদের। শহরটিতে যুবকদের মোটরসাইকেলে মহড়া করতে দেখা গেছে।বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে মিছিল করছেন। মান্ডালে এক বিক্ষোভকারী বলেন, সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের প্রধানদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে। 

তারা আমাদের ভবিষ্যতকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে।ভোরে সেনা অভ্যুত্থানের বিরোধীদের সমর্থন করার অভিযোগে একজন প্রখ্যাত অভিনেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।মিয়ানমারে গত ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। 

তবে এনএলডি নিরঙ্কশ জয় পেলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। তারা নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে।গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। 

তবে ওইদিন ভোরে সু চি ও দেশটির প্রেসিডেন্টসহ এনএলডির শীর্ষ বেশ কিছু নেতাকে গ্রেপ্তারের পর এক বছরের জন্য মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনী।সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের পর গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও গ্রেপ্তার নেতাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে সাধারণ মানুষ।এরই মধ্যে সু চির রিমান্ডের মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। 

নতুন অভিযোগ এনে আটকে রাখা হয়েছে তাকে। মঙ্গলবার সামরিক জান্তার পক্ষ থেকে নতুন নির্বাচনের আশ্বাস দেওয়া হলেও তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।