নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের ভোট। ঘটেছে সহিংসতা, রক্তারক্তি আর হতাহতের মতো ঘটনাও।বুধবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলেছে। এরপরই শুরু হয়েছে ভোট গণনা। এখন অপেক্ষা ফল ঘোষণার।শীতের সকালের শুরুতে বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি আরও বাড়তে থাকে। এরই সঙ্গে বাড়ে উৎকণ্ঠাও। সকাল ১০টার দিকে নগরীর ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ঝাউতলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হন। 

নিহত মো. আলম (২৮) কুমিল্লার বুড়িচং এলাকার সোলতান আহমেদের ছেলে।ভোটগ্রহণ চলাকালে নগরীর লালখান বাজারে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সঙ্গে আরেক পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০-১২ জন আহত হয়েছেন। 

তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পাওয়া গেছে আরও কিছু সহিংসতার।নির্বাচনে ১৪, ১৫ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী মনোয়ারা বেগম মণি ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। একটি কেন্দ্রেও এজেন্ট দিতে না দেওয়া, তার মেয়ের উপর হামলা ও নিজের ভোটটাও দিতে না পারার অভিযোগে মণি ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে মারামারি ও সহিংসতার ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালী থানার ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিল বিএনপি নেতা এবং বিএনপি মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ ইসমাইল বালীকে আটক করেছে পুলিশ। 

কয়েকটি কেন্দ্রে মারামারির ঘটনার পর বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ইসমাইল বালীকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন অভিযোগ করেছেন, অধিকাংশ ভোটকেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে বাকলিয়া টিচার্স ট্রেনিং কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন শাহাদাত। ভোট দেওয়া শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।তবে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ভোট সুন্দর, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে ফলাফল যাই হোক, তা মেনে নেবেন বলে জানান। 

জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিচ্ছেন। কোথাও কাউকে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে না। আশা করি, আমি জয়লাভ করবো।আগামী পাঁচ বছর চট্টগ্রামের নগরপিতা কে হবেন, তা নির্ধারিত হচ্ছে আজ। 

ভোটের মাধ্যমে চূড়ান্ত হবে ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।নির্বাচনে মোট ভোটার ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। মেয়র পদে সাতজন ও কাউন্সিলর পদে ২২৯ জন প্রার্থী আছেন ভোটের মাঠে। নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন মোট ১৪ হাজার ৩৭০ জন র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্য। ২৫ প্লাটুন বিজিবি সোমবার থেকে টহলও দেয় নগরীর বিভিন্ন সড়কে।