আর মাত্র ঘণ্টা কয়েক! এরপরই পদ ছাড়তে হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। আসছেন জো বাইডেন। অবসান হচ্ছে ‘ক্ষ্যাপাটে’ এক রাজনৈতিক নেতার, ‘ক্ষ্যাপাটে’ ট্রাম্পের।স্থানীয় সময় মঙ্গলবারই পূর্ণ কর্মদিবস পাচ্ছেন ট্রাম্প। বুধবার বাইডেনের শপথের আগ পর্যন্ত পাবেন অর্ধ কর্মদিবস। এ হিসেবে সব হিসেব-নিকেশ মিলিয়ে নিজের পথ খোঁজার শেষ দিন চলে যাচ্ছে ট্রাম্পের। এদিন ঘটতে পারে অনেক কিছুই।বিবিসি বলছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের শেষ পূর্ণ কর্মদিবস এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। হোয়াইট হাউসে তার ব্যস্ততাও চরমে। 

দিনভর নানা কাজে ব্যস্ত থাকবেন তিনি। এদিন প্রায় ১০০ জনকে সাধারণ ক্ষমা করতে নথিতে সই করতে পারেন প্রেসিডেন্ট।বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজের সমর্থক, বন্ধুপ্রতিম কেউ, রাজনৈতিক মিত্র, স্বজন, পরিবারের সদস্য এমনকি নিজের জন্য ক্ষমার পথ করে যেতে পারেন ট্রাম্প।আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, ট্রাম্প সমর্থকদের সহিংস আচরণ আর দাঙ্গার পরিপ্রেক্ষিতে জো বাইডেনের শপথ গ্রহণ উপলক্ষে এরই মধ্যে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন। তবে সংশয় রয়েছ তাদেরও।অভিজ্ঞ রাজনীতিক বাইডেনের কাছে অভিষে অনুষ্ঠান নিয়ে জাঁকজমকের খুব একটা বালাই নেই। তিনি চান মানুষের মধ্যে করোনা আরও ছড়িয়ে না পড়ুক। 

ফলে অভিষেক অনুষ্ঠান হবে সীমিত আকারে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে।হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সেভাবে কার্যালয়ে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন শেষ পূর্ণ কর্মদিবসেও একইভাবে থাকবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। শেষ পূর্ণ কর্মদিবসে অনেকের সঙ্গে কথা বলতে হবে তাকে, অংশ নিতে হবে বৈঠকেও।বুধবার বাইডেনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে শেষ মুহূর্তে বের হয়ে অ্যান্ড্রিউ এয়ার ফোর্স বেসে কর্মী ও সমর্থকদের বিদায় নিয়ে বিদায় অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ট্রাম্প। এরপর শেষ বারের মতা প্রেসিডেন্ট বিমানে ফ্লোরিডায় গলফ ক্লাব রেসিডেন্সে যাবেন তিনি।গত ৩ নভেম্বরের নির্বাচন ঘিরে আগে থেকেই ‘গুজব’ ছড়াচ্ছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। 

বারবার বলে এসেছেন, তাকে হারানোর জন্য চক্রান্ত হচ্ছে। নির্বাচনের সময়েও নানা গুজব আর ভুল তথ্য ছড়িয়ে সংবাদ মাধ্যম গরম রেখেছেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত তার জন্য পরাজয়ই নির্ধারিত হয়।নির্বাচনে হেরে গিয়ে নির্বাচনের সময়ের চেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন রিপাবলিকান ট্রাম্প। সমর্থকদের নানা সময় উত্তেজিত করে তোলেন তিনি। তার সমর্থকরা সে সময় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে আদালত পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলেন। ৬ জানুয়ারি নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়।ওইদিন ওয়াশিংটনে দেশটির আইনসভা কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটলে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ডেমোক্রাট প্রার্থী জো বাইডেনের জয়ের স্বীকৃতির আনুষ্ঠানিকতা চলছিল। 

এরই এক পর্যায়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। সহিংসতায় মৃত্যু হয় পাঁচজনের।এরপরও সহিসংতার পথ খুঁজতে থাকেন ট্রাম্প ও তার সমর্থকেরা। অস্ত্র নিয়ে রাজ্যপরিষদগুলোতে হাজির হতে দেখা গেছে তাদের। 

তবে কড়াকড়ি আরোপ হয়েছে দেশজুড়ে।এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমতা ছাড়তে হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে। উত্তরসূরীর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের অনুষ্ঠানে থাকছেন না তিনি। এর আগে প্রতিদ্বন্দ্বীর অভিষেক বয়কটের এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন মাত্র তিনজন প্রেসিডেন্ট।