দখল-পুনর্দখলকে কেন্দ্রে করে হাউথি বিদ্রোহীদের ইয়েমেনের সরকারের গৃহযুদ্ধ চলছে। এর মধ্যে ইয়েমেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় আল মাহরা প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সৌদি আরব ও ওমানের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে।আর এই বিরোধ মূলত ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা উপসাগরীয় অঞ্চলের তেল রফতানির কৌশলগত রুট হরমুজ প্রণালী ঘিরে অস্থিরতার কারণে বিকল্প উপায় বের করার জন্য সৌদি আরবের ওপর অতিরিক্ত চাপ রয়েছে। ২০১৮ সালের আগস্টে ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যায়, সৌদি আরব থেকে আল মাহরার নিশতুন সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত পাইপলাইন তৈরি করতে চায় রিয়াদ। যার মাধ্যমে সরাসরি আরব সাগর এবং ভারত মহাসাগরে তেল পাঠানো নিশ্চিতের পরিকল্পনা সৌদি প্রশাসনের।

সাবেক ইয়েমেনি প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লাহ সালেহ পাইপলাইন তৈরি, করিডোর নির্মাণ এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় সৌদি আরবের নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাখ্যানের পর নিজেদের বহু পুরনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ২০১৪ সালে শুরু হওয়া ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধকে অন্যতম সুযোগ হিসেবে দেখে আসছে রিয়াদ।আনাদোলু এজেন্সিকে আবাদ স্ট্যাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মুহাম্মদ বলেন, আরব সাগরে আল মাহরাকে কৌশলগত এলাকা হিসেবে বিবেচনা করছে সৌদি আরব। যা ইরান নিয়ন্ত্রিত হরমুজ প্রণালী থেকে অনেক দূরে। একইসঙ্গে তেহরানের উপকূলকে মাদক এবং অস্ত্র চোরাচালের সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে রিয়াদ।আল মাহরায় নিজেদের লক্ষ্য বাস্তবায়নে ২০১৭ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ওই অঞ্চলে নিজেদের উপস্থিতি বাড়িয়ে চলছে সৌদি আরব। আল মাহরার বিভিন্ন স্থাপনা, নিশতুন বন্দর, সারফিত বন্দর, শিহেন বর্ডার ক্রসির এবং আল ঘায়েদা বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে রিয়াদ। 

ওইসব এলাকায় এবং স্থানীয় উপকূল অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে দেশটি।ওই এলাকায় করিডোর, পাইপলাইন এবং স্থাপনা নির্মাণের সম্ভবতা যাচাইও করেছে সৌদি এরামকো কোম্পানি। ইয়েমেনের গণমাধ্যম জানায়, এরপর ২০১৮ সালের জুনে আল মাহরা পরিদর্শন করেন সৌদি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আল-জারের।মুহাম্মদ বলেন, সৌদি প্রকল্পে ইয়েমেনের সরকার আপত্তি জানায়নি। বরং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপসাগরীয় যে কোনো প্রকল্পে সানার স্বার্থ রক্ষা, প্রাদেশিক সার্বভৌমত্ব, সরকারের অধিকার এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা সমুন্নত রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। গুরুত্ব দেওয়া হয়, আঞ্চলিক এবং জাতিগত বিভেদ এড়িয়ে চলার ওপরও।