চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্র ছাড়া সবখানে ‘ভালো নির্বাচন’ হয়েছে বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর। তিনি বলেছেন, তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশেই নির্বাচনে ‘সহিংসতার কিছু ঘটনা ঘটে’। 

সে হিসাবে আমি বলব, বরং আমাদের এখানে ‘কমই হয়েছে’। মাত্র দুই তিনটি কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে। এক ধরনের দুষ্কৃতকারীরা এ কাজ করে।ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নে ইসি সচিব বলেন, ভোটারদের ‘অনীহা’ এর একটি কারণ হতে পারে। এখনকার নাগরিকদের কেন যেন রাষ্ট্রের প্রতি যে দায়িত্ব আছে, ভোট যে তার অধিকার- এটা তারা মনে করছেন না। কষ্ট করে ভোট দেব, কেন যাব অন্যকে ভোট দিতে, এতে আমার কী লাভ... এ ধরনের একটা মনমানসিকতা হয়ে গেছে।ইসি সচিব বলেন, উন্নত বিশ্বে বেশিরভাগ দেশে ভোটের ক্ষেত্রে এমন হয়। 

আমেরিকার ক্ষেত্রে দেখবেন, সবদিক দিয়ে এত উন্নত তারা; কিন্তু ভোটের ক্ষেত্রে ভোট দিতে যায় না বেশির ভাগ মানুষ। তো আমাদের দেশেও অনেকটা ওই রকমই; দেশ উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ লক্ষণ দেখা দিয়েছে। মানকিতা বদলে গেছে।বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ আর গুলিতে একজনের প্রাণহানির মধ্য দিয়ে বুধবার বিকেল ৪টায় বন্দরনগরীতে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। ভোট শেষে ঢাকায় নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সামনে কমিশনের প্রতিক্রিয়া জানাতে আসেন জ্যেষ্ঠ সচিব।তিনি বলেন, গণমাধ্যমে আমরা যে নির্বাচন দেখেছি, আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে রিপোর্ট পেয়েছি, তাতে বলব ভালো নির্বাচন হয়েছে।চট্টগ্রামের ৭৩৫টি কেন্দ্রে বুধবার সকাল ৮টায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ শুরু হয়। 

ভোট চলাকালে চট্টগ্রামের লালখানবাজার, পাথরঘাটা আর পাহাড়তলীতে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।এরমধ্যে পাহাড়তলীতে গুলিতে একজন নিহত হন; পাথরঘাটায় ইভিএম মেশিন ভাঙচুর করার অভিযোগে বিএনপি সমর্থিত এক কাউন্সিলর প্রার্থিকে আটক করে পুলিশ।নির্বাচন কমিশন সচিব বলেন, দুটো কেন্দ্রে শুধু কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোক, যারা ইভিএমে ভোট হোক তা চায় না, তারা আক্রমণ চালিয়েছিল এবং ইভিএম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভোট স্থগিত করা হয়। বাকিগুলোতে অত্যন্ত সুন্দরভাবে ভোট হয়েছে। 

অধিকাংশ কেন্দ্রে ফলও হয়ে গেছে।আলমগীর বলেন, কিছু লোক তো থাকেই সবসময়। চট্টগ্রামে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২০ হাজার সদস্য নিয়োজিত ছিলেন; কমিশনও যত রকম ব্যবস্থা নেওয়া যায় নিয়েছিল।এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ইভিএমে ভোট হলে অনেকে মনে করে যে জাল ভোট দেওয়া যাবে না, তারাই এ ধরনের আক্রমণ করে।সহিংসতায় প্রাণহানি ‘ভয়ঙ্কর অবস্থা’ কি-না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি কোথায় হলো? যেখানে ৭৩৫ কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র দুইটা কেন্দ্র স্থগিত। ইভিএম ভাঙচুর না করলে সেখানেও নির্বাচন হত। ভোট নেওয়া সম্ভব হয়নি বলে বন্ধ রাখা হয়েছে দুইটা।