জন্মদিনে কোনো আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় পালিত হলো বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ৭৩তম জন্মদিন। ১৯৪৮ সালের ২৬ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ে তিনি জন্মগ্রহন করেন।মঙ্গলবার জন্মদিনের প্রথম ভোরে প্রবাসী কন্যা মির্জা সামারুহ ও ঢাকায় ছোট মেয়ে মির্জা সাফারুহর টেলিফোনে ঘুম ভাঙে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। 

বন্ধু-বান্ধব, নেতৃবৃন্দের অনেকে টেলিফোন করে বিএনপি মহাসচিবকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কয়েকজন বিদেশী বন্ধুও সকালে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাকে। দলের প্রতিটি স্তরের নেতাকর্মী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।সকালে মির্জা ফখরুল বলেন, ৭৩ বছরে পা রাখলাম। জন্মদিন মানে আরো একটি বছর চলে গেছে, বৃদ্ধ থেকে বৃদ্ধের পথে। বড় মেয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে টেলিফোন করেছে, হ্যাপি বার্থ ডে বললো। 

ছোট মেয়ে ঢাকায় থাকে। সেও ভোরে বাবার ঘুম ভাঙিয়েছে, উইশ করেছে। দুই কন্যা নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রাহাত আরা বেগমের সংসার। ভাড়া বাসায় তারা উত্তরা থাকেন।বড মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মির্জা শামারুহ অষ্ট্রেলিয়ায় স্বামী-সন্তানকে নিয়ে আছেন। সেখানে সিডনির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরিয়াল ফেলোশিপ নেন। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার ক্যানভারায় ফেডারেল মেডিজেল কাউন্সিলে সিনিয়র সাইন্সন্টিস্ট। ছোট মেয়ে মির্জা সাফারুহ ঢাকার ধানমন্ডির 'স্যানি ডেল' স্কুলে শিক্ষকতা করেন।মির্জা ফখরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন। 

তিনি ঢাকা কলেজে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। ছাত্র জীবনে ফখরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন শাখার সভাপতি এবং এসএম হল শাখারও নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরাসরি অংশগ্রহণ করেন।১৯৮৬ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন তিনি। ১৯৮৮ সালে ফখরুল ঠাকুরগাঁও পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালে তিনি ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি এবং কৃষক দলের প্রথমে সহসভাপতি এবং পরে সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন দীর্ঘদিন। 

তিনি বিএনপি থেকে দুই বার সংসদ সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন।১/১১'র বিএনপির দুঃসময়ে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির সঙ্গে থেকে মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পাশে ছিলেন ফখরুল। দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে মির্জা ফখরুল জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এবং খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর ২০১১ সালে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এবং ২০১৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব নির্বাচিত হন ফখরুল।২০১৮ সালে একাদশ নির্বাচনে বগুড়া-৬ আসন থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি শপথ গ্রহণ না করায় ওই আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির জিএম সিরাজ নির্বাচিত হন।