দেশের তিন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশায় সর্বত্র শীতের অনুভূতি বেড়েছে। এই শৈত্যপ্রবাহ আরও বিস্তার ঘটিয়ে স্থায়ী থাকতে পারে দু'একদিন। 

তাপমাত্রা কিছুটা উঠা-নামা করে এ বছর শীত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ৩০ জানুয়ারির দিকে আরেক দফা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, আগামী দু'একদিন রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমলেও এরপর তা আবার বাড়বে। 

তবে কুয়াশা ও মেঘ থাকার কারণে অনেক এলাকায়ই সূর্যের তেমন দেখা মিলবে না। এতে শীত থাকবে। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এই শীত থাকতে পারে।শনিবার দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে, ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া রাঙামাটিতে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সীতাকুন্ডে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।বড় এলাকাজুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে চলে এলে মৃদু; ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে মাঝারি এবং ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলে ধরা হয়।আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ জানান, রাঙামাটি, শ্রীমঙ্গল ও পঞ্চগড় অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। রাজধানীসহ অনেক জায়গায় ১০-১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকলেও ঘনকুয়াশা থাকায় বেশ শীত অনুভূত হচ্ছে। আরও দু'দিন এ ধরনের শীত থাকতে পারে। 

চলতি সপ্তাহে রাতের তাপমাত্রা বাড়লেও জানুয়ারির শেষে আরেক দফা শীতের দাপট থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ৩০ জানুয়ারির দিকে তাপমাত্রা কমার আভাস রয়েছে। এসময় আরেক দফা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু না হওয়ার কারণে চারদিকে প্রচুর কুয়াশা পড়ছে। 

এই কুয়াশাও ধীরে ধীরে কমে আসবে।এ দিকে ঘনকুয়াশার কারণে সারাদেশে সড়ক ও নৌ চলাচল বিঘ্ন ঘটছে। ঘন কুয়াশায় টানা ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে শনিবার সকাল ৮টায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। দীর্ঘ সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় শতাধিক যানবাহন পারের অপেক্ষায় রয়েছে। 

এর আগের গত শুক্রবার কুয়াশার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় রাত ১০টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায়ও লঞ্চ চলাচলে সিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ও জানুয়ারির শুরুতে শীতের দাপট ছিল উত্তর জনপদে। গত ১৮-২৩ ডিসেম্বর এবং ২৬-৩১ ডিসেম্বর রংপুর, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। 

১৯ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। ১৫ জানুয়ারি বদলগাছিতে থার্মোমিটারের পারদ নেমে যায় ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।