২০২০ সালের পুরোটাই কঠোর দমন-পীড়নের মধ্য দিয়ে গেছে চীনের বিশেষ অঞ্চল হংকং। বেইজিং হংকংকে তাদের কব্জায় আনতে আরও কঠোর নীতিতে এগিয়েছে। চীনের এসব কর্মকাণ্ডে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বিশ্ব নেতারা। গত বছরের মে মাসে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার হংকং ‘জাতীয় নিরাপত্তা বিল’ পাস করে। আর হংকংয়ের ওপর চীনের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে এটি অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভ আর তাদের দমন পীড়নের ফলে চীনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে।  

দ্য ইকোনমিকস টাইমসের এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। হংকংয়ের মিডিয়া মোগল অ্যাপল ডেইলি সংবাদপত্রের প্রতিষ্ঠাতা জিমি লাই বলেছেন, নতুন আইনটি হংকংয়ের জন্য মৃত্যুর হাতছানি স্বরূপ। তিনি বলেন, জাতীয় সুরক্ষা আইন পুরো গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। আমাদের আরও দৃঢ় হতে হবে এবং ঘুরেফিরে কারাগারে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। কানাডা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও হংকংয়ের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তি বাতিল করেছে।ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে হংকংয়ে ৫০ জনেরও বেশি গণতন্ত্রকর্মীকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। 

সেইসঙ্গে তারা চীনকে হংকংয়ের স্বাধীনতার প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, এটা স্পষ্ট যে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ দূর করতে জাতীয় সুরক্ষা আইনকে ব্যবহার করছে চীন। তারা বলেন, গ্রেপ্তার বন্ধ করে আমরা হংকং এবং চীনা কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষকে হংকংয়ের লোকদের আইনত অধিকার এবং স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে অনুরোধ করছি।যৌথ বিবৃতিতে তারা জানিয়েছেন, হংকংয়ের জাতীয় সুরক্ষা আইনের অধীনে অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটি চীন-ব্রিটিশ যৌথ ঘোষণার লঙ্ঘন এবং এটি ‘এক দেশ, দুটি নীতি’ কাঠামোকে ক্ষুণ্ণ করে। 

জাতীয় নিরাপত্তা আইন হংকংয়ের জনগণের অধিকার এবং স্বাধীনতাকে হ্রাস করেছে।হংকংয়ে সেপ্টেম্বরে স্থগিত হওয়া বিধানসভা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন-উল্লেখ করেন তারা।